Market Status: Closed
  Monday, 25 Nov '24
   18:45:44 (BST)

১২ আগস্ট, ২০২১, চট্টগ্রাম:

আজ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ লি. (সিএসই) স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর ৪৬ তম শাহাদাত বাষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষ্যে শোক সভা এবং দোয়া মাহফিল অনু্ষ্ঠানের আয়োজন করে ।

সিএসই কর্তৃক আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর সম্মানিত কমিশনার ড. মিজানুর রহমান, আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি. এর সম্মানিত চেয়ারম্যান, মো. ইউনুসুর রহমান, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি. এর সম্মানিত পরিচালক, রকিবুর রহমান এবং সিএসই এর সম্মানিত পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম । এতে সভাপতিত্ব করেন সিএসই এর সম্মানিত চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম । এতে আরো অংশগ্রহণ করে, সকল ট্রেক এর সম্মানিত সদস্য এবং রিপ্রেজেনটেটিভগণ, সম্মানিত ‍প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া এর সাংবাদিকবৃন্দ এবং সিএসই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি. এর সম্মানিত চেয়ারম্যান, মো. ইউনুসুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু দেশ ‍দিয়েছেন, পতাকা দিয়েছেন । অনেক প্রত্যাশা ছিল তাঁর কাছে। তাঁর কাজের সুফল ৫০ বছর পরে পাচ্ছি । বঙ্গবন্ধুর কথা বললে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এর প্রসঙ্গ এসে যায় । বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে জাতীয় যে কোন ক্রান্তিকালে তিনি সব সময় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দিয়ে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন । এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ০৭ ই মার্চ এর ভাষণের আগে যখন বঙ্গবন্ধু তার বক্তব্য প্রদানে বিশেষ চিন্তিত ছিলেন তখন বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে উপস্থিত বুদ্ধিতে বক্তব্য প্রদানের সাহস যুগিয়েছেন ।”

 ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ লি. এর সম্মানিত পরিচালক, রকিবুর রহমান বলেন, “ মাটির মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু । আজকের আমার অবস্থানের পেছনে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর বিশেষ অবদান । বঙ্গবন্ধুর সাথে প্রত্যক্ষভাবে এবং একই সাথে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে  কাজ করার সুযোগ তার জীবনে বিশেষ অর্জন ।  সেই প্রেক্ষাপটে আজও শেখ রাসেল পরিষদ এর সভাপতি হয়ে দেশ সেবার সুযোগ পেয়েছেন এবং করে যাচ্ছেন । পুজিঁবাজারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অবদান অনস্বীকার্য । প্রধানমন্ত্রী চান পুঁজিবাজার আরো ভালো হউক , ব্যাংক নয় পুজিঁবাজার হোক অর্থ উত্তোলণের উপযুক্ত স্থান ।”

সিএসই এর সম্মানিত পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু আমাদের চেতনা এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অবদান দেশের সর্বদা বিরাজমান । আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপকে এবং তাঁর ও তাঁর পরিবারের সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি ।

 

প্রধান অতিথি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এর সম্মানিত কমিশনার ড. মিজানুর রহমান বলেন, এখন আগস্ট মাস। শোকের মাস। এই মাসের ১৫ তারিখ হলো বাঙ্গালি জাতির জন্য শোক দিবস । এই দিনটিতে কতিপয় বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে নির্মমভাবে সপরিবারে নিহত হন বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পুনর্বাসিত হতে থাকে । তারা এ দেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে নানা উদ্যোগ নেয় । শাসকদের রোষানলে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণও যেন নিষিদ্ধ হয়ে পড়েছিল । বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল । দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন হলে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করা হয় । শত প্রতিবন্ধকতার পরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন সামনের দিকে । ১৯৭২ সালে অর্থনীতির আকার মাত্র আট বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য। সঞ্চয় জিডিপির মাত্র ৩ শতাংশ। বিনিয়োগ জিডিপির ৯ শতাংশ । জিডিপি এখনকার চেয়ে বেশি ছিল । গত ১২ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ গঠন করেছিলেন, সে সুন্দর জায়গায় আমরা পৌঁচাচ্ছি । করোনার সময়েও ইন্ডিয়ার অর্থনীতি যেখানে হোচঁট খেয়েছে সেখানে আমাদের নেত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি ।  

এতে সভাপতিত্ব করেন সিএসই এর সম্মানিত চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম , তিনি তার বিস্তারিত আলোচনায় বলেন, আজ এই বিশেষ দিনে আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি ৩০ কোটি শহীদদের, যাদের রক্তের বিনিময়ে আমাদের এই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার অর্ধশত বছর আমরা পার করেছি। দেশ এগিয়ে গেছে স্বপ্লোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে। আজ আমরা একত্রিত হয়েছি বঙ্গবন্ধুর জীবন সংগ্রাম  নিয়ে কিছুটা আলোকপাত করতে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস মানে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস । তার জীবন ইতিহাসের সাথে বাংলাদেশের ইতিহাস জড়িত । এই মহান মানুষটি জীবনে যাই করেছেন তার সবই দেশের জন্য করেছেন । তার প্রত্যেকটা পদক্ষেপ ছিল দেশের সার্থে । তার জন্ম না হলে আজ আমরা স্বাধীনতা পেতাম না । বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময় । দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের আত্মত্যাগ বিশ্বে অদ্বিতীয় । বঙ্গবন্ধু পরিবারের মতো পৃথিবীর দ্বিতীয় কোন রাজনৈতিক পরিবার দেশ গঠনে এত আত্মত্যাগ করেনি ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন । তিনি ছাত্র অবস্থায় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন । ৫২’র ভাষা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সংগ্রামী নেতা । ইংরেজ শাসনের অবসানের জন্য অনেকের মতো বঙ্গবন্ধুও পাকিস্তান আন্দোলনে যুক্ত হয়েছিলেন । কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির মুহূর্তেই যেভাবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা শুরু হলো, জমিদারি প্রথা বিলোপে মুসলিম লীগ সরকারের গড়িমসি দেখা গেল, কৃষকদের কর্তন প্রথার নাম করে হয়রানি করা শুরু হলো এবং সর্বোপরি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা না করার যে ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রের মদদে চালু হলো, তাতে তাঁর পাকিস্তানের প্রতি মোহ কেটে গেল । তাই নতুন করে বাঙালির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষণের আন্দোলনের গোড়াপত্তন করলেন ।

 শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ৬ দফার প্রণেতা ছিলেন ।এর বাস্তবায়ন ছিলো তাঁর অন্ত-প্রাণ জুড়ে এবং এই ৬ দফার প্রভাব ছিল তার পোশাকেও । আপনাদের অনেকের জন্য বলছি, বিশেষ করে যারা এ প্রজন্মের, তাদের জন্য যে, বঙ্গবন্ধু যে মুজিব কোট পড়তেন তাতেও ছিল ০৬ টি বোতাম এবং এই ০৬ টি বোতম বহন করছে ৬ দফার প্রতীক । যা আজও এইভাবেই দৃশ্যমান ।

 ১৯৭০ সালের নির্বাচনে অংশ নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগকে এ দেশের গণমানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীকে পরিণত করেন। পাকিস্তানের সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তুলে ষাটের দশক থেকেই তিনি বাঙালি জাতীয়তাবাদের অগ্রনায়কে পরিণত হন । ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উত্তাল সমুদ্রে বঙ্গবন্ধু বজ্রদৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের  মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম ।’ এই ঘোষণায় উদ্দীপ্ত, উজ্জীবিত জাতি স্বাধীনতার মূলমন্ত্র পাঠ করে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে । ছিনিয়ে আনে দেশের স্বাধীনতা ।

স্বাধীন দেশে তিনি পা রাখেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি। সেদিন স্পষ্ট করে বলে দেন, মাটি ও মানুষকে উপজীব্য করেই তিনি গড়ে তুলবেন ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপ্রিয় বাংলাদেশ। গ্রামে-শহরে, নারীতে-পুরুষে, শ্রেণি-শ্রেণিতে বৈষম্য অবসানের জন্য তিনি এমন এক সমাজতন্ত্রের কথা বললেন, যা একান্তই দেশজ। ১৯৭২ সালের ২৬শে মার্চ প্রথম জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবসে আরো স্পষ্ট করে উচ্চারণ করলেন ‘সোনার বাংলার’ কথা ।১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত নয় মাসব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর সমগ্র বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। শেখ মুজিব এই ধ্বংসযজ্ঞকে “মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ধ্বংসযজ্ঞ” হিসেবে উল্লেখ করে ৩০ লাখ মানুষ নিহত ও ২ লাখ নারীর ধর্ষিত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন । ১৯৭২ সালে অর্থনীতির আকার মাত্র আট বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য। সঞ্চয় জিডিপির মাত্র ৩ শতাংশ। বিনিয়োগ জিডিপির ৯ শতাংশ। পুরো অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত। এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, দেশের ভেতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত ২০ লাখ মানুষের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করার চ্যালেঞ্জ। তবু তিনি অল্প সময়েই প্রণয়ন করেছেন সংবিধান, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও শিক্ষা কমিশন। স্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক। করেছেন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সমান গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের ওপর। কেননা তিনি জানতেন কৃষিই জনগোষ্ঠীর খাদ্য জোগান দিতে পারবে, শ্রমশক্তির বড় অংশের কর্মসংস্থান দেবে এবং একই সঙ্গে শিল্পের কাঁচামাল ও পণ্যের চাহিদা জোগাবে। তাই কৃষি অবকাঠামোর পুনর্নির্মাণ, উন্নত বীজের সরবরাহ, বিনা মূল্যে বা ভর্তুকিতে কৃষি উপকরণ সরবরাহ, এক লাখ কৃষকের সার্টিফিকেট মামলা খারিজ এবং কৃষকদের জন্য রেশনব্যবস্থা চালু করেন। অন্যদিকে বিদেশি মুদ্রার প্রকট অভাব, ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের এবং দেশীয় উদ্যোক্তার অনুপস্থিতির কারণে তিনি শিল্প বিকাশের পুরো দায় রাষ্ট্রের কাঁধে তুলে নিতে বাধ্য হন। তবে ব্যক্তি খাতের বিরুদ্ধে ছিলেন না তিনি। প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় ব্যক্তি খাতের কার্যকর বিকাশের পরিবেশ সৃষ্টির প্রস্তাবনা এবং ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরের বাজেটে ব্যক্তি খাত বিনিয়োগসীমা ২৫ লাখ থেকে তিন কোটি টাকায় উন্নীত করা এবং ১৩৩টি পরিত্যক্ত কারখানা ব্যক্তিমালিকানায় হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর্থ-সামাজিক রূপান্তরে যে দক্ষ মানবসম্পদের প্রয়োজন, সে কথা মনে রেখেই কুদরাত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশন এবং প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় গণমুখী প্রযুক্তিবান্ধব শিক্ষাব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছিলেন ।

জাতির ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ পুরুষ বঙ্গবন্ধুর অমর কীর্তি এই স্বাধীন বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্বে নেমে এসেছিল শোকের ছায়া । হত্যাকারীদের প্রতি ছড়িয়ে পড়েছিল ঘৃণার বিষবাষ্প । পশ্চিম জার্মানির নেতা নোবেল পুরস্কার বিজয়ী উইলি ব্রানডিট বলেছিলেন, ‘মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না । যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে, তারা যেকোনও জঘন্য কাজ করতে পারে ।’

বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর স্বাধীনতাবিরোধীরা এ দেশের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় পুনর্বাসিত হতে থাকে । তারা এ দেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে নানা উদ্যোগ নেয় । শাসকদের রোষানলে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণও যেন নিষিদ্ধ হয়ে পড়েছিল । বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ঠেকাতে কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ জারি করেছিল মোশতাক সরকার । দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসীন হলে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করা হয় । বিচার শুরু হয় ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর । ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালি জাতির ললাটে যে কলঙ্কতিলক পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ৩৫ বছরেরও বেশি সময় পর ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি সেই কলঙ্ক থেকে জাতির মুক্তি ঘটে ।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত। বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাবার সংগ্রামে এখন লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতোনা । পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে । সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে । দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কোলে ঠেলে দিয়ে, ইতিহাসকে বিকৃত করে বাংলাদেশকে লন্ডভন্ড করে দেয়া হয়েছে । বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বাংলাদেশ তখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। জিডিপি এখনকার চেয়ে বেশি ছিল । গত ১২ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ গঠন করেছিলেন, সে সুন্দর জায়গায় আমরা পৌঁচাচ্ছি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশ বা আঞ্চলিক না; আন্তর্জাতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে মেধাবী নেতৃত্বে আসন করে নিয়েছেন। অনেক বড় বড় ধনী দেশ এ করোনার সময়ে তাদের দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশের দরজা বন্ধ হয়নি। শেখ হাসিনার এ নেতৃত্বই আমাদের স্বপ্নের গন্তব্যে পৌঁছাবে ।

বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চিরঞ্জীব, তার চেতনা অবিনশ্বর। মুজিব আদর্শে শানিত বাংলার আকাশ-বাতাস, জল-সমতল। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের কাছে শেখ মুজিবুর রহমানের অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ চির প্রবহমান থাকবে। জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে । বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল ।

 

পরিশেষে বঙ্গবন্ধু এবং তার সাথে নিহত পরিবারের সব সদস্যদের জন্য বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

 

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সিএসই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মামুন-উর-রশিদ ।

বিস্তারিত জানতে

তানিয়া

সিএসই-পি এন্ড পি আর

ফোন: ০১৭৬০৭৪৫৭৩৬

| August 12, 2021 |