Market Status: Closed
  Monday, 25 Nov '24
   18:19:46 (BST)

১৭ আগস্ট, ২০২২, চট্টগ্রাম:

আজ চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ পিএলসি (সিএসই) স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এর ৪৭ তম শাহাদাত বার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষ্যে শোক সভা এবং দোয়া মাহফিল অনু্ষ্ঠানের আয়োজন করে ।

সিএসই কর্তৃক আয়োজিত এই বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন, সিএসই এর সম্মানিত চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম । অন্যান্য আলোচকরা হলেন সিএসই এর সম্মানিত পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম, জনাব মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ । এ সময় সিএসই এর সম্মানিত পরিচালক প্রোফেসর এস এম  সালামত উল্লাহ ভুঁইয়া, জনাব মোঃ রেজাউল ইসলাম এবং জনাব মোঃ সিদ্দিকুর রহমান উপস্থিথ ছিলেন । এতে আরো অংশগ্রহণ করেন, সিএসই এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ গোলাম ফারুক এবং সিএসই এর সকল কর্মকর্তাবৃন্দ ।

প্রধান আলোচক সিএসই এর সম্মানিত চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম তাঁর আলচনায় বলেন, দেশ গঠনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের আত্মত্যাগ বিশ্বে অদ্বিতীয় ।  আমরা শ্রদ্ধাভরে স্মরন করছি তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপকে এবং তাঁর ও তাঁর পরিবারের সবার আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ইতিহাস মানে, স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাস । । তাকে নিয়ে এই সীমিত সময়ে আলচনায় করে শেষ করা যাবে না । তাঁর ক্ষণস্থায়ী জীবনে যা ই করেছেন তার সবই দেশের জন্য করেছেন । ১৪ বছর কাটিয়েছেন পাকিস্তানের কারাগারে । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরার সময়ই প্রথম তাঁর দাবি দাওয়া আদায়ের প্রবল পদক্ষেপ আমারা দেখতে পাই । সেসময়ে তিনি চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবি আদায়ের জন্য বহিষ্কৃত হন তবুও তিনি মাথা নত করেন নি । সেসময় বাঙ্গালী জাতি ছিল সব দিকে শোষিত এবং অবহেলিত, এমনকি তারা কর্মস্থলে এবং ব্যবসার ক্ষেত্রেও ছিল তাচ্ছিল্যপূর্ণ ব্যবহারের স্বীকার । সরকারী বা পদস্থ কোন স্থানে তাদেরকে সুযোগ দেয়া হত না । বঙ্গবন্ধু এইসব ব্যাপারেও  ছিলেন সোচ্চার , চেয়েছেন পরিবর্তন , এমনকি পদক্ষেপ ও নিয়েছিলেন বাংলাদশে কন্ট্রোলার অফিস করার ।

স্বাধীন দেশে তিনি পা রাখেন ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি । ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী পরিচালিত নয় মাসব্যাপী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের পর সমগ্র বাংলাদেশের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল । শেখ মুজিব এই ধ্বংসযজ্ঞকে “মানব ইতিহাসের জঘন্যতম ধ্বংসযজ্ঞ” হিসেবে উল্লেখ করে ৩০ লাখ মানুষ নিহত ও ২ লাখ নারীর ধর্ষিত হওয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন । বঙ্গবন্ধুর সাড়ে তিন বছর শাসনামল উন্নয়নের এক বিস্ময় । ১৯৭২ সালে অর্থনীতির আকার মাত্র আট বিলিয়ন ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শূন্য। সঞ্চয় জিডিপির মাত্র ৩ শতাংশ। বিনিয়োগ জিডিপির ৯ শতাংশ। পুরো অবকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত। এক কোটি শরণার্থীর পুনর্বাসন, দেশের ভেতরে ধ্বংসপ্রাপ্ত ২০ লাখ মানুষের ঘরবাড়ির ব্যবস্থা করার চ্যালেঞ্জ। তবু তিনি অল্প সময়েই প্রণয়ন করেছেন সংবিধান, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও শিক্ষা কমিশন। স্থাপন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক। করেছেন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। সমান গুরুত্ব দিয়েছেন কৃষি ও শিল্পের উন্নয়নের ওপর। আমরা আজ অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রনয়নের কাজ করছি যার ভিত্তি হল বঙ্গবন্ধুর সেই প্রথম পরিকল্পনার অংশ , এমনকি শিল্প ক্ষেত্রে ও যে পরিবর্তন তাও তাঁর দূরদর্শী চিন্তার অংশ ।

বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে ৩৫ বছর আগেই বাংলাদেশ স্বপ্নের জায়গায় পৌঁছে যেত । বাংলাদেশকে যে জায়গায় নিয়ে যাবার সংগ্রামে এখন দেশ লিপ্ত, ১৫ আগস্টের ঘটনা না হলে এ সংগ্রাম করতে হতোনা । পঁচাত্তরে ১৫ আগস্টের ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্নত বাংলাদেশের স্বপ্নকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়া হয়েছে । সম্ভাবনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে । দারিদ্র্য ও বৈষম্যের কোলে ঠেলে দিয়ে, ইতিহাসকে বিকৃত করে বাংলাদেশকে লন্ডভন্ড করে দেয়া হয়েছে । বঙ্গবন্ধুকে যখন হত্যা করা হয়, বাংলাদেশ তখন স্বল্পোন্নত দেশ ছিল। গত ১২ বছরে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সফলতার চূড়ায় নিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধু যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ গঠন করেছিলেন, সে সুন্দর জায়গায় আমরা পৌঁচাচ্ছি । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে বাংলাদেশ বা আঞ্চলিক না; আন্তর্জাতিক নেতায় পরিণত হয়েছেন । প্রধানমন্ত্রী বিশ্বে মেধাবী নেতৃত্বে আসন করে নিয়েছেন। শেখ হাসিনার এ নেতৃত্বই আমাদেরকে  স্বপ্নের গন্তব্যে পৌঁছাবে । জাতির পিতা চেয়েছিলেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে । বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণের মুক্তির যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে জয় করে বিশ্বসভায় একটি উন্নয়নশীল, মর্যাদাবান জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল । আমাদের নিজেদের জায়গা থেকে জাতির জনক-এর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমাদের বলিষ্ঠ পদক্ষেপে এগিয়ে যেতে হবে এবং দেশকে সারা পৃথিবীতে আরও সমুন্নত করতে হবে । তাঁর স্বপ্নের বাংলা , ক্ষুধা মুক্ত , দারিদ্র্য মুক্ত বাংলা গড়া এ হবে আমাদের লক্ষ্য এবং হৃদয়ের অন্তঃ স্থল থেকে তাঁকে উপলদ্ধি করতে হবে এবং  যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে তাঁর স্বপ্ন পূরণের ধাপগুলোকে সম্পন্ন করতে হবে ।

সিএসই এর সম্মানিত পরিচালক মেজর (অব.) এমদাদুল ইসলাম তাঁর আলোচনায় বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল একটি সুসংঘটিত সেনাবাহিনী এবং বিশ্ব দরবারে বিস্তৃত থাকবে এই বাহিনীর কর্মযজ্ঞের সুনাম । আজ আমাদের সেনাবাহিনী সারা বিশ্বে দক্ষতা ও সুনামের সাথে কাজ করছে । অন্য দেশ থেকে আমাদের বাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে আগ্রহ তৈরি হয়েছে এবং মেধা ও কর্মে আনুকরনীয় হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার হাত ধরে আজ আমাদের সেনাবাহিনী সমৃদ্ধ , এতে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক ফাইটার বিমান মিগ ২৯, আধুনিক বিএনএস এবং সার্ফেস মিসাইল  । একই সাথে আমাদের দেশের বেশ কিছু অঞ্চলও আজ সুরক্ষিত এবং সেই কৃতিত্বও আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যার হাত দিয়ে আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের বাস্তবায়ন  এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে ।

সম্মানিত পরিচালক জনাব মোহাম্মাদ মহিউদ্দিন, এফসিএমএ, বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন কতটুকু হয়ছে তা নিয়ে বিশ্লেষণ হওয়া আজ জরুরী । আমরা আজ যারা সমাদৃত, সুপ্রতিষ্ঠিত তারা কতখানি তাঁর সপ্নের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছি সেটা ও জানতে হবে এবং নিজেদের স্ব অবস্থান থেকে সততার সাথে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । বঙ্গাবন্ধুর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যা তিনি তাঁর মাত্র তিন বছরের জিবদ্দশায় শুরু করে গিয়েছিলেন তাঁর অগ্রগতি ও সম্পূর্ণতার জন্য একতাবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে । বঙ্গবন্ধু এবং তার সাথে নিহত পরিবারের সব সদস্য ও অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি । ।

সিএসই এর নির্বাহীদের সহকর্মীদের পক্ষে ব্যবস্থাপক জনাব খালেদ হামিদি বলেন, ভারত বর্ষের ইতিহাস হলো উপনিবেশিকতার ইতিহাস । ২০০ বছরের উপনিবেশিকতার ইতিহাসে শেষ উপনিবেশক ছিল পাকিস্তান, যারা শাসন করেছেন ২৪ বছর, তাদের কাছ থেকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন জাতির জনক । জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম যাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের কথা বলেছেন এবং রবিন্দ্রনাথের কবিতায় কবি যে স্বাধীনতার কথা বলছেন তা বাস্তবে এনে দিয়েছেন জাতির জনক । বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড একটি নজির বিহীন ঘটনা, এখানে উল্লেখ্য যে শেক্সপিয়ার এর লেখা ৪ টি নাটকে যে  গভীর ট্রেজেডি বর্ণিত হয়েছে বঙ্গবান্ধুর হত্যাকাণ্ড যেন সেই দুঃখকে ও হার মানিয়েছে । বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আমার লেখা কবিতা যার শেষ লাইন বলছি- “৩২ নাম্বার এর থেকে সেই রক্ত জাতির জনকের রক্ত যেন সারা বাংলায় গড়িয়ে পরছে “ বলে জাতির জনক এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি ।

পরিশেষে বঙ্গবন্ধু এবং তার সাথে নিহত পরিবারের সব সদস্যদের জন্য বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয় ।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিএসই এর এজিএম এবং হেড অফ ইন্সপেকশন এন্ড এনফোর্সমেন্ট জনাব আরিফ আহমেদ ।

বিস্তারিত জানতে

তানিয়া

সিএসই-পি এন্ড পি আর

ফোন: ০১৭৬০৭৪৫৭৩৬

 

 

 

| August 17, 2022 |